বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আলীমাবাদ ইউনিয়নের মিঠুয়া এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীর চরাঞ্চল থেকে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর একটি জাপানি বাণিজ্যিক জাহাজ উদ্ধার করা হয়েছে।
জাহাজটির নাম ছিল এমবি মোস্তাবি, যা ১৯৯২ সালের আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম থেকে বৈদ্যুতিক মালামাল নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে ঝড়ে পড়া একটি দুর্ঘটনায় এটি ডুবে যায়। তৎকালীন সরকার কিছু মালামাল উদ্ধার করতে পারলেও জাহাজটি তলিয়ে থাকে নদীর তলদেশে।
চর হয়ে ওঠা মিঠুয়া গ্রাম
দীর্ঘদিন ধরে নদী সরে গিয়ে সেখানে জেগে ওঠে চর মিঠুয়া, যেখানে বর্তমানে কৃষি জমি ও বসতি গড়ে উঠেছে। এই চরের নিচেই ছিল ডুবে যাওয়া বিশাল জাহাজটি।
উদ্ধার কার্যক্রম
উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেন অভিজ্ঞ মেরিন কর্মী আব্দুল মন্নান, যিনি জানান, জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট, প্রস্থ ১৪ ফুট ও উচ্চতা ১৭ ফুট। প্রায় ৫ একর জমি খনন করে, ৭০ হাত মাটির নিচ থেকে এটি তোলা হয়।
উদ্ধারে ব্যবহৃত হয়:
৩টি শক্তিশালী বিকেবার্স (ড্রেজার),
বিশেষ ক্রেন,
পেশাদার ডুবুরি,
আধুনিক সিলিং ও পানি পাম্পিং প্রযুক্তি।
উদ্ধারপ্রাপ্ত জাহাজে থাকা প্রাচীন ও মূল্যবান যন্ত্রাংশ, বিশেষ করে মেশিনটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১২-১৫ কোটি টাকা হতে পারে, যদিও এটি বিকল অবস্থায় ২০-২৫ লাখ টাকায় ভাঙারিতে বিক্রি হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা
উদ্ধার কার্যক্রমে অনেক ব্যর্থতা পেরিয়ে সফলতা এসেছে। ২০১২ সাল থেকে কাজ শুরু করে, দীর্ঘ এক যুগ ধরে অবশেষে এটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ঠিকাদার ইউসুফ মিয়া জানান, বিআইডব্লিউটিএর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় খুলনার ঠিকাদার আনসার উদ্দিন মিয়া কাজ পান, যার সাব-কন্ট্রাক্টে উদ্ধার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রশাসনের মন্তব্য
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান জানান, বিআইডব্লিউটিএর টেন্ডার অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জাহাজটি উদ্ধার করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপ:
জাহাজ ডুবির বছর: ১৯৯২
উদ্ধার কাজ শুরু: ২০১২
সম্পূর্ণ উদ্ধার: ২০২5 সালে (সম্ভাব্য)
জাহাজের আকার: ১৮০x১৪x১৭ ফুট
উদ্ধার খনন এলাকা: ৫ একর
মূল্যবান যন্ত্রাংশ: ১২-১৫ কোটি টাকা (বর্তমান বাজারে)